ঢাকা   বৃহস্পতিবার, ০৯ জানুয়ারি ২০২৫ | ২৫ পৌষ ১৪৩১

খালেদা জিয়ার অপরিহার্য একজন ফাতেমা

Daily Inqilab স্টাফ রিপোর্টার

০৯ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:১২ এএম | আপডেট: ০৯ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:১২ এএম

 

নাম তার মোহাম্মদ ফাতেমা বেগম। পেশায় একজন গৃহপরিচারিকা। দেশের গণমাধ্যমগুলো তাকে গুরুত্ব না দিলেও তিনি বাংলাদেশের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যাক্তি। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার দিতে তাকিয়ে থাকেন দেশের কোটি কোটি মানুষ। অথচ বেগম জিয়া বাসায় তাকিয়ে থাকেন সেই ফাতেমার দিকে। ফাতেমাই ২৪ ঘন্টা বেগম জিয়াকে দেখভাল করেন। কারাগার, গুলশানের বাসা এমনকি উন্নত চিকিৎসার জন্য ল-নে অবস্থানরত বেগম খালেদা জিয়ার ছায়াসঙ্গী হয়ে উঠেছেন ফাতেমা বেগম। এমনকি বেগম জিয়ার জন্য ফাতেমা বেগম সেচ্ছায় কারাবন্দী হওয়ার বিরল দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করেছেন। গরীর ঘরে জন্ম নেয়া ফাতেমা একজন অন্যরকম নারী। উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে হয়তো দেশ-জাতির কাছে মহিয়সী নারী হতে পারেননি কিন্তু পর্দার অন্তরালে মহিয়সী হওয়ার চেয়ে তার ভুমিকা কম নয়।

ফাতেমা বেগম বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত কর্মী। বহু বছর ধরে তিনি বেগম জিয়াকে দেখভাল করেন। ২০১৮ সালে ফ্যাসিস্ট হাসিনা রাজনৈতিক প্রতিহিসায় জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় বেগম খালেদা জিয়াকে আদালমের মাধ্যমে কারাদন্ড দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়। খালেদা জিয়ার সঙ্গে কারাগারে ছিলেন এই বিশ্বস্ত কর্মী ফাতেমা। দীর্ঘদিন বেগম জিয়ার সঙ্গে থাকা ফাতেমা এবার লন্ডন সফরেও তার সঙ্গী হয়েছেন।

জানা যায়, প্রায় দুই দশক ধরে বিএনপি চেয়ারপারসনের গৃহপরিচারিকা হিসেবে কাজ করছেন ফাতেমা। ৪০ বছর বয়সী এই নারী খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত কাজগুলো করেন।
বিএনপি চেয়ারপারসন তার দৈনন্দিন কাজের জন্য অনেক ক্ষেত্রেই ফাতেমার ওপর নির্ভরশীল। তাই দেশের ভেতর তো বটেই, দেশের বাইরে গেলেও খালেদা জিয়ার সঙ্গে থাকেন ফাতেমা বেগম।

২০১৮ সালে প্রথম আলোচনায় আসেন ফাতেমা। বিএনপি চেয়ারপারসনের খালেদা জিয়ার সাজা দেয়া হলে তখনকার ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে ব্যক্তিগত গৃহপরিচারিকা হিসেবে ফাতেমাকে রাখার আবেদন করা হয়। অনুমতি পাওয়ার পর কারাগারে বেগম জিয়ার সঙ্গী হন ফাতেমা। প্রায় ২৫ মাস কারাবন্দী খালেদা জিয়ার সঙ্গে থেকে তাকে সেবা দিয়েছেন। একজন বন্দির সঙ্গে গৃহপরিচারিকা থাকা নিয়ে রাজনৈতিক বিতর্ক হলেও শেষ পর্যন্ত তিনি থেকেছেন কারাগারে, বাসায় কিংবা হাসপাতালে। ওই সময় ফ্যাসিস্ট হাসিনার রাষ্ট্রীয় প্রচেষ্টায় ফাতেমা বেগমকে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া থেকে আলাদা করার ছেস্টা করেন। এমনকি তাকে প্রচুর অর্থ দেয়ার প্রলোভনও দেয়া হয়। আওয়ামী লীগের তাবেদার গণমাধ্যমে প্রচার করা হয় বেগম জিয়া গৃহপরিচালিকা ফাতেমাকে ৫ হাজার টাকা বেতন নিয়মিত না দেয়ায় নোয়াখালীতে তার সন্তানেররা না খেয়ে থাকছেন। হাসিনার অলিগার্কদের মিথ্যা প্রচারণায় সায় দেননি। এমনকি তিনি টাকার প্রলোভনে সায় না দিয়ে বেগম জিয়ার সঙ্গে থেকে গেছেন।

এর আগে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিলের প্রতিবাদ এবং পুনর্বহালের দাবির আন্দোলনে ২০১৩ সালের ২৯ ডিসেম্বর যখন গুলশানের কার্যালয় থেকে খালেদা জিয়াকে বের হতে দেওয়া হচ্ছিল না; খালেদা জিয়াকে আটকে দেয়া হয়েছিল, তখন বিএনপি চেয়ারপারসনের পেছনে পতাকা হাতে দাঁড়ানো ফাতেমা বেগমকে নিয়ে অনেকেই কৌতূহল দেখান।

ব্যাক্তিগত জীবনে ফাতেমা খুবই স্বল্পভাষী। একবার সাংবাদিকদের তিনি বলেছিলেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের সঙ্গে তিনি অনেক দেশে গেছেন।
খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত কর্মকর্তারা বলছেন, দলীয় চেয়ারপারসনের প্রতি ফাতেমার মমত্ববোধ প্রবল। সব সময় পাশে থাকা, চেয়ারপারসনকে প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো মনে করিয়ে দেওয়াসহ সব কাজই ফাতেমা বেগম করে থাকেন।

দীর্ঘদিন ধরে দলীয় চেয়ারপারসনের এই কাজগুলো সঠিকভাবে করার কারণে খালেদা জিয়া এখন তার কাজগুলোর ব্যাপারে ফাতেমার ওপর নির্ভর করেন। এ কারণে দৈনন্দিন কাজে সহযোগিতার জন্য তিনি ফাতেমাকে সঙ্গে রাখার জন্য আবেদন করেছেন। ফাতেমা বাবা-মার সঙ্গে ঢাকার শাহজাহানপুরে থাকতেন। ফাতেমার সন্তানও থাকেন তাদের সঙ্গে। ফাতেমা বেগম একজন বিশ্বস্ত গৃহপরিচালিকা হিসেবে দৃষ্টান্ত হয়ে রয়েছেন।


বিভাগ : জাতীয়


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

কালীগঞ্জে শহীদ এন্ড সন্সের বনভোজন যেন খেটে খাওয়া শ্রমিকদের মিলনমেলা

কালীগঞ্জে শহীদ এন্ড সন্সের বনভোজন যেন খেটে খাওয়া শ্রমিকদের মিলনমেলা

নোয়াখালীতে ডায়াবেটিক সমিতির কম্বল বিতরণ

নোয়াখালীতে ডায়াবেটিক সমিতির কম্বল বিতরণ

পঞ্চগড়ে চলছে মাসব্যাপি তারুণ্যের উৎসব

পঞ্চগড়ে চলছে মাসব্যাপি তারুণ্যের উৎসব

নিক্সন ও তার স্ত্রীর ব্যাংক হিসাবে ৩ হাজার ১৬২ কোটি টাকা লেনদেন

নিক্সন ও তার স্ত্রীর ব্যাংক হিসাবে ৩ হাজার ১৬২ কোটি টাকা লেনদেন

রাতারাতি বাজার নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয় : বাণিজ্য উপদেষ্টা

রাতারাতি বাজার নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয় : বাণিজ্য উপদেষ্টা

‘তারুণ্যের উৎসব’ জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করার একটি ভালো উদ্যোগ

‘তারুণ্যের উৎসব’ জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করার একটি ভালো উদ্যোগ

জাজিরা থানার ভেতরে মিলল ওসির ঝুলন্ত মরদেহ

জাজিরা থানার ভেতরে মিলল ওসির ঝুলন্ত মরদেহ

বাসের লকারে থাকা অর্ধশতাধিক ছাগল আগুনের তাপে ঝলসে মারা গেল

বাসের লকারে থাকা অর্ধশতাধিক ছাগল আগুনের তাপে ঝলসে মারা গেল

মেয়ার্স ঝড়ে রংপুরকে বড় লক্ষ্য দিল বরিশাল

মেয়ার্স ঝড়ে রংপুরকে বড় লক্ষ্য দিল বরিশাল

হাসিনার দুর্নীতি অনুসন্ধানে যৌথ টাস্ক ফোর্স গঠনের সিদ্ধান্ত

হাসিনার দুর্নীতি অনুসন্ধানে যৌথ টাস্ক ফোর্স গঠনের সিদ্ধান্ত

মুজিবনগরে ইসলামী ব্যাংকের এজেন্ট শাখায় দুর্ধর্ষ চুরি

মুজিবনগরে ইসলামী ব্যাংকের এজেন্ট শাখায় দুর্ধর্ষ চুরি

কুয়েটে ভর্তি পরীক্ষা শনিবার, সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন

কুয়েটে ভর্তি পরীক্ষা শনিবার, সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন

বিডিআর জওয়ানদের মুক্তির দাবিতে শাহবাগ অবরোধ

বিডিআর জওয়ানদের মুক্তির দাবিতে শাহবাগ অবরোধ

ভাসমান ডিপো স্থায়ীকরণ ও জ্বালানি তেল সরবরাহের দাবীতে মানববন্ধন

ভাসমান ডিপো স্থায়ীকরণ ও জ্বালানি তেল সরবরাহের দাবীতে মানববন্ধন

শরীয়তপুর জাজিরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে

শরীয়তপুর জাজিরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে

নোবিপ্রবিতে মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক কর্মশালা

নোবিপ্রবিতে মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক কর্মশালা

আশুলিয়ায় বাসা বাড়িতে অবৈধ তিতাস গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন

আশুলিয়ায় বাসা বাড়িতে অবৈধ তিতাস গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন

‘বরবাদ’ সিনেমার দ্বিতীয় অংশের শুটিংয়ে মুম্বাইয়ের পথে শাকিব

‘বরবাদ’ সিনেমার দ্বিতীয় অংশের শুটিংয়ে মুম্বাইয়ের পথে শাকিব

কেরানীগঞ্জে অপহরণকারী চক্রের ৬ সদস্য র‍্যাবের হাতে গ্রেফতার

কেরানীগঞ্জে অপহরণকারী চক্রের ৬ সদস্য র‍্যাবের হাতে গ্রেফতার

শিবালয়ে খাবারের সাথে নেশা জাতীয় দ্রব্য মিশিয়ে গৃহকর্তার সর্বস্থ লুটে নেয়া চক্রের এক সদস্য আটক

শিবালয়ে খাবারের সাথে নেশা জাতীয় দ্রব্য মিশিয়ে গৃহকর্তার সর্বস্থ লুটে নেয়া চক্রের এক সদস্য আটক